খাওয়ার জন্য সবে রান্না ঘরে ঢুকেছেন,এমন সময় দেখলেন বেশ স্বাস্থ্যবান এক তেলাপোকা দেয়ালের উপরে বসে মাথার এন্টেনা নেড়ে আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছে। আপনার তখন কেমন লাগবে ?
গা ঘিনঘিনে অনুভূতি জাগানোর জন্য এই দৃশ্যটিই যথেষ্ট, তাই না? তবে দুর্ভাগ্যের কথা হলো এই দৃশ্যটি বাড়িতে প্রায়ই দেখতে হয়। সবসময় নোংরা আবর্জনায় থাকা এই পোকাকে দেখলেই মনে হয় এর চেয়ে বাজে পোকা খুব কমই আছে। তেলাপোকা বাড়িতে দেখতে পেয়েছেন আর তাড়ানোর ইচ্ছা জাগে নি এমনটি কখনোই হবেনা।
এর খারাপ দিক কেবল এর বাজে চেহারাই না, নানা রকম রোগ-জীবাণু ছড়াতেও এই পোকা ওস্তাদ। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মতে ডায়রিয়া, আমাশয়, কলেরা ও টাইফয়েড ছড়ানোর জন্য তেলাপোকার বেশ নামডাক আছে। বিশেষ করে যারা এজমা রোগে আক্রান্ত, তেলাপোকা তাদের জন্য একধরনের হুমকি ধরা যায়।একটি তেলাপোকা তার সাথে ৩৩ ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ৬ ধরনের পরজীবি পোকা ও প্রায় ৭ ধরনের প্যাথোজেন বহন করে থাকে। এসব ব্যাকটেরিয়া খাবারের সাথে মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে হতে পারে ভয়ানক কিছু।
তার উপরে এরা দ্রুত সন্তান উৎপাদন করে বলে বাড়িতে আসার কিছুদিনের ভিতরেই বাড়ি তেলাপোকায় ছেয়ে যেতে পারে!
তাহলে এই আপদকে বাড়ি থেকে দূর করার উপায় কী?
বেশ কয়েকটা উপায় আছে।
তেলাপোকাকে আমরা মানুষেরা যুগের পর যুগ ধরে তাড়িয়ে আসছি। তাই আমরা এতদিনে জেনে গেছি কী কী পদ্ধতিতে তেলাপোকাকে বাড়ি থেকে দ্রুত দূর করা যায়। আজকে কথা বলব সহজ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে যেগুলি ব্যবহার করে আপনিও তেলাপোকার হাত থেকে নিস্তার পেতে পারেন। চলুন দেখে নিই সেগুলি কী কী।
১.বরিক এসিড
তেলাপোকা দমনের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী এবং সহজ উপায় হলো বরিক এসিডের ব্যবহার করা। বরিক এসিড গুঁড়া প্রায় সব সাধারণ দোকানেই পাওয়া যায়। এটি তেলাপোকাদের জন্য এক প্রকার বিষ ধরতে পারেন। বরিক এসিডের প্রভাবে তেলাপোকারা খুব দ্রুত মারা যায়। এটি ব্যবহার করাও বেশ সহজ।
কয়েক প্যাকেট বরিক এসিড কিনে এনে রাতের বেলা ঘরের যেখানে তেলাপোকারা বেশি চলাচল করে সেখানে ছিটিয়ে দিন। খুব বেশি ঘন করে দিবেন না, নাহলে তেলাপোকারা বুঝে যাবে এবং ঐদিকটা এড়িয়ে চলবে।
ফ্রিজ থেকে বা অন্যান্য আসবাবের ফাঁকফোকরে তেলাপোকারা থাকলে আশেপাশে বা তার প্রবেশপথে বরিক এসিড ছিটিয়ে দিন। সকালে আবার বরিক এসিডগুলি পরিষ্কার করে নিন কেননা কোনোভাবে তা মানুষ বা পশুপ্রাণির খাবারে মিশলে তা ক্ষতিকর হয়ে উঠবে। এভাবে কয়েকদিন চালিয়ে গেলেই দেখবেন তেলাপোকাদের আর দেখা যাচ্ছেনা।
২.ডিশওয়াশিং লিকুইড
থালা বাসন মাজার জন্য যেসব লিকুইড ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হয়,তেলাপোকা দূর করার জন্য এটিও হতে পারে ভাল একটি অস্ত্র। ক্যানসাস ইউনিভার্সিটির এক স্টাডিতে দেখা গেছে লিকুইড ডিশ আর পানির মিশ্রণ সরাসরি তেলাপোকার গায়ে স্প্রে করে দিলে এরা কয়েকঘন্টার মধ্যেই মারা যায়। তাই তেলাপোকা দূর করতে ডিশওয়াশিং লিকুইডের ব্যবহার বেশ প্রচলিত। চায়না তেলাপোকা দূর করার জন্যেও এই পদ্ধতিটি কাজে দেয়।
৩.সাবান – পানি
বায়োলজিক্যাল সায়েন্স রিসার্চের জার্নালের একটি স্টাডিতে দেখা গেছে সাবান পানি মিশিয়ে তেলাপোকার উপর প্রয়োগ করার পর অর্ধেকের বেশি তেলাপোকা ২৪ ঘণ্টার ভেতরে মারা গেছে। এর জন্য সাবান-পানির ৩২% সল্যুশন ব্যবহার করা হয়েছিল, অর্থাৎ সহজ ভাষায় তিন ভাগ পানির সাথে এক ভাগ সাবান মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করা হয়েছিল। তাই ঘরোয়া ও নিরাপদ পদ্ধতি হিসাবে সাবান-পানি ব্যবহার করা ভাল একটি সিদ্ধান্ত।
৪.বেকিং সোডা ও চিনির মিশ্রণ
তেলাপোকা নিধনের জন্য বেকিং সোডাও বেশ পরিচিত এক সমাধান। বেকিং সোডার সাথে চিনি মিশিয়ে ছিটিয়ে দিলে তেলাপোকারা তা খেতে আসে। চিনির সাথে বেকিং সোডা তেলাপোকার শরীরে প্রবেশ করে এবং এটাই তাদের কাল হয়ে দাঁড়ায়। তবে এই পদ্ধতি একশো ভাগ কাজ করে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি কেননা অনেক ক্ষেত্রে এটি কার্যকরী ফলাফল দেখালেও সবসময় তা হয়নি। নিরাপদ ও ঘরোয়া পদ্ধতি হিসাবে আপনিও এটি চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
এইভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতেই নিজ উদ্যোগেই চাইলে তেলাপোকা দূর করে ফেলতে পারবেন। তবে আপনার যদি এত সময় ও ধৈর্য্য না থাকে কিংবা এক দিনের মধ্যেই তেলাপোকা ও অন্যান্য পোকা আপনার বাড়ি থেকে বিদেয় করতে চান, তাহলে আপনার উচিত প্রফেশনাল সাহায্য নেয়া। আর তার জন্য আমরা সবসময়ই আপনার পাশে আছি।
দক্ষ টিম ও আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদভাবে আমরা বাড়ি, অফিস ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে পোকা-মাকড় দূর করে থাকি। আমাদের সেবাসমূহঃ
১। ছারপোকা দমন
২। তেলাপোকা দূর করা
৩। উইপোকা দমন ও নিস্তার করা
৪। ইঁদুর দমন
৫। মশা দমন
আমাদের উপরে আস্থা রেখেছেন যারা-
EASTERN BANK
BSRM Steel
CHITTAGONG STOCK EXCHANGE
ABUL KHAIR GROUP
HAMIM GROUP
TARGET GROUP